মোঃ মুক্তাদির হোসেন,স্টাফ রিপোর্টার।।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ধর্ষণের ঘটনায় গর্ভধারণের পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ভুমিষ্ঠ নবজাতক হত্যার ঘটনায় প্রেমিকযুগলকে আটক করেছে থানা পুলিশ। থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) আড়াইটার দিকে কালীগঞ্জের বিসমিল্লাহ ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এন্ড ট্রমা জেনারেল হাসপাতালের মহিলা ওয়াশরুমের ময়লার ঝুড়িতে এক নবজাতক কন্যা শিশুর লাশ পাওয়া যায়। লাশের মুখে সাদা রঙের টয়লেট টিস্যু গুঁজে দেওয়া এবং নাড়ী প্রায় দুই ইঞ্চি উপর থেকে ছেঁড়া ছিল। লাশের পরিচয় নিশ্চিত হতে না পেরে হাসপাতালের পরিচালক মো. শহীদ মুন্সি কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মৃত নবজাতক শিশুটির সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে। পরবর্তীতে পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কালীগঞ্জ পৌরসভার দক্ষিণ ভাদার্ত্তী গ্রামের আব্দুল লতিফের কিশোরী কন্যা অপরাজিতাকে (১৫) সনাক্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে অপরাজিতা জানায়, একই গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র তুহিন ইসলামের (১৬) সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হলে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। শুক্রবার দুপুরে চিকিৎসার জন্য সে স্থানীয় বিসমিল্লাহ ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এন্ড ট্রমা জেনারেল হাসপাতালে যায়। সেখানে গেলে তার প্রসব বেদনা উঠে এবং মহিলা ওয়াশরুমে তার একটি কন্যা সন্তান প্রসব হয়। কিন্তু নবজাতকটি কান্না না করায় সে নিজেই নাড়ি কেটে তার মুখে টিস্যু পেপার গুজে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে রেখে বাড়ী চলে যায়। পরে পুলিশ তুহিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। নবজাতক হত্যার ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক শহীদ মুন্সী বাদী হয়ে শনিবার (৪ অক্টোবর) অপরাজিতার বিরুদ্ধে ৫(১০)২৫ নং মামলা দায়ের করেন। পরে অপরাজিতাকে ধর্ষনের অভিযোগে তার মা মোছা. জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে তুহিনের বিরুদ্ধে রবিবার (৫ অক্টোবর) ৭(১০)২৫ নং অপর একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলাউদ্দিন জানান, হাসপাতালের ময়লার ঝুড়িতে নবজাতকের লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে আমরা তদন্ত কাজ শুরু করি। এক পর্যায়ে সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে একজনকে সনাক্তের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী হয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে বাচ্চা প্রসব এবং কোন কান্না না করায় বাচ্চাকে ময়লা ঝুড়িতে ফেলে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ী চলে যাওয়ার কথা স্বীকার করে। পরে ধর্ষক তুহিনকেও আটক করা হয়। এ ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। আটককৃতদের রবিবার দুপুরে গাজীপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।