হাতীবান্ধা(লালমনিরহাট) প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট হাতীবান্ধা উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কর্মকর্তা রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে টুইন পিট টয়লেট নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্বব্যাংক ও এশীয়া অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাংক (AIIB) অর্থায়নে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ‘মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি’ প্রকল্পের আওতায় টুইন পিট ল্যাট্রিন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সুবিধা নিশ্চিত করা। প্রতিটি ল্যাট্রিন নির্মাণে ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও সরেজমিনে দেখা গেছে, নামমাত্র ১০–১২ হাজার টাকায় নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগী গড্ডিমারী ইউনিয়নের শিল্পী বেগম জানান, “৩ হাজার টাকা দিয়ে ল্যাট্রিন বরাদ্দ নিয়েছি, কিন্তু কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের।”
একই এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এই টয়লেট এক বছরও টিকবে না। বৃষ্টি হলে যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।” ইসমত আরা বেগম, কালাম, হাসেমসহ আরও অনেকে অভিযোগ করেন, “টয়লেটের নিচে বালু বা সিমেন্টের গোলা কিছুই দেওয়া হয়নি।”
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, হাতীবান্ধা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ২৭৪৮টি ল্যাট্রিন নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯ কোটি ৬১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্ধারিত মানের রিং, স্ল্যাব, পিলার এবং অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে নির্মাণকাজ চালাচ্ছে। ইউনিয়নের কয়েকজন জনপ্রতিনিধি পরিদর্শনে গিয়ে এসব অনিয়মের প্রমাণও পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রতিটি ল্যাট্রিন নির্মাণে কিছু ইট, ১০টি রিং, দুটি স্ল্যাব, চার ইঞ্চি ব্যাসার্ধের সিমেন্টের পিলার এবং টিনের প্রয়োজন হলেও বরাদ্দকৃত অর্থের এক-তৃতীয়াংশ ব্যয়ে কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। এতে মান নিয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি, বরাদ্দের একটি বড় অংশ ঠিকাদার ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাসেল মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের কাজ হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামীম মিয়া জানান, আমিও এমন অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। তবে স্থানীয়রা দ্রুত স্বচ্ছ তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক : জিল্লুর রহমান
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত