রংপুর প্রতিনিধি:
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বড়াইবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে পৈতৃক সম্পত্তি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন মেসার্স পাপড়ি ফিলিং স্টেশনের প্রয়াত মালিক মো. ওয়াজেদ আলীর স্ত্রী ও তিন কন্যা। অভিযোগে বলা হয়েছে, শিক্ষক আলমগীর ওয়াজেদ আলীর মৃত্যুর পরপরই পারিবারিক পুকুরে অবৈধভাবে ড্রেজিং করে বালু ভরাটের মাধ্যমে দখলের চেষ্টা চালান।
জানা গেছে, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. ওয়াজেদ আলী গত ১৪ জুন ২০২৫ তারিখে মারা যান। তার মৃত্যুর পর প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশ ঘেঁষা ওয়াজেদ আলীর পৈত্রিক পুকুরে বালু ফেলে তা ভরাটের চেষ্টা চালান। এতে বাধা দেন ওয়াজেদ আলীর শোকাহত স্ত্রী ও তিন কন্যা। পরবর্তীতে তারা লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর অভিযোগ দায়ের করলে ইউএনও ভরাট কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন এবং নিজে সরেজমিনে উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে প্রধান শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করেন বলে অভিযোগকারীদের দাবি। স্থানীয় সূত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তবে অভিযোগ রয়েছে, ইউএনওর নির্দেশ সত্ত্বেও শিক্ষক আলমগীর হোসেন পেছনে থেকে ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে উল্টো ভুক্তভোগী পরিবারকে হেনস্তা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মৃত ওয়াজেদ আলীর পরিবার ও এলাকাবাসীর একাংশ দাবি করেছে, উক্ত পুকুরটি ওয়াজেদ আলীর বাবার সম্পত্তি এবং তা কখনোই বিদ্যালয়ের নামে লিখে দেওয়া হয়নি। সেখানে ওয়াজেদ আলী নিজে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করতেন। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, “স্কুলের নামে দখলের নামে আসলে এটা ছিলো প্রধান শিক্ষকের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা।”
অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নানা অনিয়ম ও ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে টাকার বিনিময়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি করার অভিযোগে সম্প্রতি সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এই অভিযোগের জেরে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতপন্থী নেতাকর্মীরাও প্রতিবাদে সরব হন।
ভুক্তভোগী পরিবার জানান, “আমরা একমাত্র পুরুষ অভিভাবক হারিয়ে শোকাহত অবস্থায় ছিলাম। এই সময় আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের চেষ্টা অত্যন্ত অমানবিক। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার বক্তব্য পেলে পরবর্তী প্রতিবেদনে তা প্রকাশ করা হবে।
এমন স্পর্শকাতর অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও উভয় পক্ষের বক্তব্য নিয়ে দ্রুত তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা। প্রশাসনের নিরপেক্ষ ও দৃশ্যমান উদ্যোগই পারে এই ধরনের সামাজিক অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে।
কল্লোল আহমেদ
মোবাঃ ০১৭১৩৩২৬৭৮৮।
প্রকাশক ও সম্পাদক : জিল্লুর রহমান
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত