কল্লোল আহমেদঃ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভাদাই এলাকায় সতী নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়া গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি রক্ষায় ও দ্রুত সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন ২০২৫) সকালে ভাঙনকবলিত স্পটে নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ সহস্রাধিক এলাকাবাসী অংশ নেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, সতী নদীর ধার ঘেঁষা এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এ পথে এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশেপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী স্কুলে যাতায়াত করে। স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করার জন্য এ সড়ক ব্যবহার করেন। কিন্তু নদীর তীব্র ভাঙনে সড়কটির বড় অংশ ইতোমধ্যে ধসে পড়েছে। কোথাও কোথাও সড়কের পিচ ঢালাই উঠে গিয়ে কাদায় পরিণত হয়েছে, যা যানবাহন চলাচলের অযোগ্য।
বক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে সতী নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কটি পুরোপুরি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। তখন এই অঞ্চলের হাজারো মানুষের যাতায়াত পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। শিক্ষার্থী, রোগী, কৃষক এবং ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
বক্তাদের আহ্বানঃ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ভূপেন্দনাথ রায়, সমাজকর্মী মামুনুর রশিদ রতন, জাকির হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যরা এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। বক্তারা বলেন, “আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা অবিলম্বে ভাঙন রোধে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ এবং সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।”
মানববন্ধন ঘিরে পুরো এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ছোট ছোট শিক্ষার্থী, অভিভাবক, নারী ও বয়স্করা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সড়ক রক্ষার দাবি জানায়। তাদের লেখা ছিল—
“সড়ক বাঁচাও, জীবন বাঁচাও”, “ভাঙন রোধ করো, আমাদের বাঁচাও”, “সড়ক নেই, স্কুলে যাই কেমন করে?”
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, সড়কটি টিকিয়ে রাখতে না পারলে এই অঞ্চলের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়বে।